আমরা যতোটা জীবনে এগোতে থাকি, ততটা জীবন পুরো আলাদা আর অজানা হতে থাকে। আমরা কখনোই বুঝেতে পারবোনা যে সময় কখন পার হয়ে গেল, আর কখন জীবন শেষ হতে চল্লো। আমি মাঝে মধ্যে মা কেও জিগেস করতে থাকি "মা, আমি বড় কবে হলাম?" বাবাও মাঝে মধ্যে আমার ছোট বেলার গল্প করে, আমার সাথে। আমার নিজেরই ছোট বেলার কথা মনে পড়তে থাকে, ভাবি যে সেই গুলো দিন কত মজার ছিল। কত খেলা-দুলা, হাসা-হাসি, নাচা-নাচি। সেই গুলো দিনের বেপারই অন্য ছিল। হ্যাঁ! একটা কথা খুবই সত্যি, আমি বড় হয়েছি আমার পুরো পরিবার থেকে বঞ্চিত হয়ে। আমি এখনো আমার পুরো পরিবার কে ভালো ভাবে চিনে উঠতে পারিনি। এইটা খুবই দুঃখের বিষয়! আমি বড় হয়েছি আমার বন্ধুদের সাথে, পাড়া-প্রতিবেশী দের কোলে-পিঠে। কখনো নিজেকে একা মনে হয় নি। কখনো না! জানো ঠাম্মা, আমি এইখানে অনেক গুলো ভাই-বোন কে পেয়েছি। আর আমি একজন কে আমার দাদাও বানিয়েছি। আমি ঐ দাদা কে 'ভাইয়ু' বলে ডাকি। এই বছর ভাই ফোটার দিন আমি ওকে ভাই ফোটাও দিয়েছি। এই বছর আমি জীবনে প্রথম বার ভাই ফোটা পালন করেছিলাম। ভাইয়ু আমাকে একদম নিজের বনু বলে মনে করে। জানো ঠাম্মা, এই বছর আমি অনেক নুতুন মানুষ কে পেয়েছি আর অনেক মানুষ কে হারিয়েছিও। এই বছর আমি জীবনে অনেক কথা শিখতে পেরেছি... অনেক কথা। আচ্ছা জীবনের কথা যদি এখন আমি শুরু করি আমি আর বলে শেষ করতে পারবোনা। আমার একটা problem আগের থেকেই ছিল আর এখন আছে। এই সমস্যার জন্য স্কুলে ম্যাডাম থেকে বোকাও খাই। আমি যদি একবার লিখা শুরু করে দি তো আমার লেখা শেষ হবার নাম নেয় না। আমার লিখতে ভালো লাগে, আর সবাই জানে আমার কুনো সময় মন একটা কাজে স্থির থাকে না। তো আমি কিছু লিখা শুরু করলেও শেষ করি না। কিন্তু এই চিঠি টা পুরো লিখবো।
তুমি জিগেস করেছিলে, আমি বাংলা পারি কি না। ঠাম্মা! আমি বলেদি তোমাকে, আমি বঙ্গ মাতার কন্যে; বাংলা আমার প্রত্যেকটা red blood cell এর মধ্যে আছে। আমি বাংলা পারবোনা সেটা কখনো হবে না। আমি বাংলা লিখতে পারি, পড়তে পারি আর বলতে তো পরিই। আমি ওরকম মেয়ে নই, আমি একটু different সবার থেকে। মানুষ বলে যারা ইংলিশ মেডিম এ পড়া শোনা করে ওরা তাদের মাতৃ ভাষা ভালো করে লিখতে, পড়তে আর বলতে পারেনা। কিন্তু আমি তো বাঙালি পরিবেশে বড় হয়েছি, তাই বাংলা বুঝতে অসবিধা হয় না। হ্যাঁ, আবার লিখার সময় বানান ভুল তো অবশ্যই হয়। জানিনা এই চিঠিতে কতটা যে ভুল বানান রয়েছে। তুমি ঠিক করে নিয় চিঠির বানান গুলি।
আর আংটি টা পেয়েছি। কিন্তু আংটি টা আমার আঙ্গুল থেকে অনেক ছোট। ঢুকছেই না
আঙুলে। মা বলেছে আমার জন্মদিনের আগে আগে আংটি টা কে বোরো করে বানিয়ে দেবে।
ভালো থেকে, আর ভালোবাসা নিয়।
ইতি
পম্মি (পৌষালি)
২০১৭, ডিসেম্বর' ৩
Comments